মুঘল বাদশাহ হুমায়ুন (1530 – 1556)
সকলকে স্বাগত জানাচ্ছি বিদ্রোহী প্রেজেন্টস বায়োগ্রাফিতে।বায়োগ্রাফির এখনকার আয়োজনে এখন আমরা জানার চেষ্টা করছি ভারতবর্ষের মুঘল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় সম্রাট নাসিরুদ্দিন মহম্মদ হুমায়ুন ( 1530 – 1556) এর সম্পর্কে।
সম্পূর্ণনাম : নাসিরুদ্দিন মহম্মদ হুমায়ুন।
জন্ম : 1508 খ্রিস্টাব্দের 6ই মার্চ।
পিতার নাম : জহিরুদ্দিন মহম্মদ বাবর
মাতার নাম : মহোম বা মাহাম বেগম
পত্নীর নাম : বেগা বেগম
দাম্পত্য সঙ্গিনী:
1. হামিদা বানু বেগম
2. বেগা বেগম (হাজী বেগম)
3. শাহজাদি খানম
4. খানেশ আগা
5. মেওয়া জান
6. শাহ-চুচাক
7. গুনওয়ার বিবি।
বংশধর :-
1. আকবর (পুত্র)
2. ফারুক খান মির্জা (পুত্র)
3. মহম্মদ কলিম মির্জা (পুত্র)
4. মহম্মদ হাকিম (পুত্র)
5. ইব্রাহিম সুলতান মির্জা (পুত্র)
6. সকিনা বানু বেগম (কন্যা)
7. আকিকা বেগম (কন্যা)
8. আমিনা বেগম (কন্যা)
9. বখতেনেসা বেগম (কন্যা)।
রাজবংশ : তৈমুরীয় রাজবংশ
প্রথম রাজত্ব : 1530 খ্রিস্টাব্দের 26 ডিসেম্বর থেকে 1540 খ্রিস্টাব্দের 17 ই মে পর্যন্ত।
রাজ্যভিষেক : 1530 খ্রিস্টাব্দের 29 ডিসেম্বর আগ্রায়।
পূর্বসূরী : বাবর
প্রথম রাজত্বকালের উত্তরসূরি : শুরী সম্রাট শেরশাহ সূরী
দ্বিতীয় রাজত্ব : 1555 খ্রিস্টাব্দের 22 ফেব্রুয়ারি থেকে 1556 খ্রিস্টাব্দের 26 জানুয়ারি পর্যন্ত।
পূর্বসূরী : শুরী সম্রাট সিকান্দার শাহ সূরী
উত্তরসূরি : আকবর
ধর্ম : সুন্নি মুসলিম (পরবর্তী কালে শিয়া মুসলিম)
মৃত্যু : 26 জানুয়ারি 1556 (দিল্লীর গ্রন্থাগারের সিঁড়ি থেকে পড়ে)।
সমাধি মন্দির : দিল্লীতে।
1508 খ্রিস্টাব্দের 6 ই মার্চ বাররে তৃতীয় স্ত্রী মহোম বা মাহাম বেগমের গর্ভে কাবুলে (বর্তমানে আফগানিস্থান) জন্মগ্রহণ করেন দ্বিতীয় মুঘল সম্রাট হুমায়ুন ।বাবরের চারটি পুত্র ও তিনটি কন্যা সন্তান ছিলো এবং তার বৈধ স্ত্রীর সংখ্যা ছিল সাত জন।1528 খ্রিস্টাব্দে হুমায়ুন বাদখশানের শাসনকর্তা হিসেবে নিযুক্ত হন। হুমায়ুন ছিলেন বাবরের জ্যেষ্ঠ পুত্র।হুমায়ুন কথার অর্থ “ভাগ্যবান” বা “সৌভাগ্যবান”।
1530 খ্রিস্টাব্দের 26 শে ডিসেম্বর পিতা বাবরের মৃত্যুর পর নাসিরুদ্দিন হুমায়ুন মাত্র 22 বছর বয়সে ভারতীয় উপমহাদেশের মুঘল মুঘল ভূখণ্ডের দ্বিতীয় সম্রাট হিসেবে দিল্লীর সিংহাসনে আরোহণ করেন। কিন্তু তাঁর রাজ্যভিষেক হয় পিতার মৃত্যুর তিন দিন পর অর্থাৎ 29 শে ডিসেম্বর আগ্রাতে।হুমায়ুনের যখন রাজ্যভিষেক হয় তখন তিনি ছিলেন অনভিজ্ঞ একজন শাসক।তাঁর সৎভাই মির্জা কামরান তাদের পিতার সাম্রাজ্যের উত্তরতম অংশ কাবুল ও কান্দাহার উত্তরাধিকারী সূত্রে পেয়েছিলেন।কিন্তু কামরান পরবর্তীকালে হুমায়ূনের প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছিলেন যা তার সাম্রাজ্যের ভীতকে নাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
সৌভাগ্যবান হওয়া সত্ত্বেও তিনি তাঁর পিতার মতোই রাজত্ব হারিয়ে ছিলেন।যদিও পরবর্তীকালে পারস্য বাদশাহ তহমাস্প্ এর সহযোগিতায় পিতার থেকেও বড় সাম্রাজ্যে ফিরে পেয়েছিলেন। হুমায়ুনের রাজত্বকাল তিনটি ভাগে বিভক্ত করে আলোচনা করাই শ্রেয়-
1. সংগ্রাম (1530 – 1540) :
1531 খ্রিস্টাব্দে হুমায়ুন বুন্দেলখণ্ডের কালিঞ্জর দুর্গ জয় করেন।1532 খ্রিস্টাব্দে আফগান সুলতান মাহমুদ লোদীকে “দৌরার যুদ্ধে” হুমায়ুন পরাজিত করে চুনার দুর্গ জয় করার চেষ্টা করলে শের খানের পুত্র জালাল খাঁ হুমায়ুনের বশ্যতা মৌখিকভাবে স্বীকার করে চুনার দুর্গ রক্ষা করেন।শেরখান মুঘলদের বশ্যতা স্বীকার করে নেন এবং তাঁর পুত্র কুতুবখানকে মৈত্রীর দূত হিসেবে হুমায়ুনের দরবারে পাঠান।1533 খ্রিস্টাব্দে হুমায়ুন দিল্লীর নিকট “দিন পনাহ্”-নামে একটি শহর নির্মাণ করেন।
1530 খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে আরোহনের সঙ্গে সঙ্গে তার সৎভাই কামরান বিদ্রোহ ঘোষণা করেন কিন্তু তাকে বাধা না দিলে কামরান সিন্ধু নদ অতিক্রম করে পাঞ্জাব দখল করে নেন।ফলে কাবুল-কান্দাহার ও পাঞ্জাব মির্জা কামরানের দখলে চলে আসে।হুমায়ুনের এই নিষ্ক্রিয়তায় উৎসাহিত হয়ে গুজরাটের অধিপতি বাহাদুর শাহ মহম্মদ জামান মির্জা তাঁর সেরা বন্দুকবাজ রুমি খানেট শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তোলেন হুমায়ুনের বিরুদ্ধে।সর্বপ্রথমে বাহাদুর শাহ মেবারের রানার সাহায্যে মালব দখল করেন।এরপর তিনি আহম্মদনগর,খান্দেশ ও বেরারের শাসকদের বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য করেন।এমনকি তিনি পর্তুগিজদের কর প্রদানে বাধ্য করেন।
এই সময় বাহাদুর শাহ বিদ্রোহী মুঘল আমীরদের আশ্রয় দেন এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন হুমায়ুন। এতে শঙ্কিত হয়ে চিতোরের রানা বিক্রমাদিত্যের মা কর্ণবতী হুমায়ুনকে একটি রাখী পাঠিয়ে ভাই বলে সম্মোধন করে তাকে সাহায্যের হাত বাড়ান। কিন্তু 1534 খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে হুমায়ুন আগ্রা থেকে গোয়ালিয়োরে চিতোর অধিকার করেন। ঐ বছরই হুমায়ুন বাহাদুর শাহকে জব্দ করার জন্য গুজরাট আক্রমণ করেন বাহাদুর শাহ 25 শে এপ্রিল গুজরাটের মান্ড নগরী থেকে পলায়ন করেন।1535 খ্রিস্টাব্দের 20 এপ্রিল বাহাদুর শাহ হুমায়ুনের সঙ্গে যুদ্ধে বিপর্যস্ত হন।হুমায়ুন চম্পানীর দুর্গ অধিকার করেন।এর ফলে মালব গুজরাট হুমায়ুনের দখলে চলে আসে।হুমায়ুনের ভাই মির্জা আশকারীকে গুজরাটের শাসক হিসেবে নিয়োগ করেন।আহমেদাবাদ ছিল আশকারীর প্রধান কেন্দ্র এবং তাঁর প্রধান উপদেষ্টা ছিল হিন্দু বেগ।কিন্তু বাহাদুর শাহের গভর্নর মানুখান আশকারীর কাছ থেকে গুজরাট পুনরায় দখল করে নেন।
এখানেই তিনি থেমে থাকেননি,1537 খ্রিস্টাব্দে হুমায়ুন চুনার দুর্গ জয় করেন রুমি খানের (ইনি ছিলেন বাহাদুর শাহের সেরা বন্দুকবাজে) সাহায্যে।হুমায়ুনের ভাইদের মধ্যে কামরান ছিল স্বার্থপর।আশকরী ছিল অযোগ্য এবং হিন্দাল ছিল বিদ্রোহী।1539 খ্রিস্টাব্দে হুমায়ুন বাংলার দায়িত্ব জাহাঙ্গীর কুলি বেগের কাছে অর্পণ করে দিল্লীতে চলে যান।সেই সুযোগে শেরশাহ তেলিয়াগার্চি ও কনৌজ দখল করে হুমায়ুনের সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন,যা হুমায়ুনকে চরম বিপাকে ফেলে দেয়।
নির্বাসন (1540 – 1545):
হুমায়ুনের সাফল্যতার বেড়াজালে এবার অন্ধকারের ঘনঘটা আবির্ভুত হয়।যার জ্বলন্ত নিদর্শন হলো-1539 খ্রিস্টাব্দের 26 শে জুন চৌসারের যুদ্ধে মুঘল বাহিনী সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত হয়।হুমায়ুনের যুদ্ধের ক্ষত সারতে না সারতেই শেরশাহ 1540 খ্রিস্টাব্দের 17 ই মে গঙ্গা নদীর ধারে কনৌজ বা বিলগ্রামের যুদ্ধে হুমায়ুনকে আক্রমণ করে হুমায়ুনের বাহিনীকে সম্পূর্ণ বিধস্থ ও ধ্বংস করে শূরী সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন।
হুমায়ুন যুদ্ধে পরাজিত হয়ে কোন রকমে প্রাণ হাতে নিয়ে লাহোরে আশ্রয় নেবার চেষ্টা করলে সৎভাই মির্জা কামরানের ভয়ে পালিয়ে যান।তিনি অমরকোটের রাজা রানা বীরশালের কাছে সাহায্য প্রাথর্না করলে বীরশাল হুমায়ুনকে আশ্রয় প্রদান করেন।আর এই অমরকোটেই 1542 খ্রিস্টাব্দের 15 ই অক্টোবর আকবর হামিদা বানু বেগমের গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন।15 বছর হুমায়ুন ভ্রাম্যমাণ জীবন কাটান।এই কারণে ঐতিহাসিক পার্শিভ্যাল স্পিয়ার হুমায়ুনকে “Problem Child” বা সমস্যা প্রবন বালক বলে অভিহিত করেছেন।
হুমায়ুন তাঁর সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারের প্রবল বাসনায় 1543 খ্রিস্টাব্দে বোলান গিরিপথের পাশ দিয়ে আফগানিস্থানে প্রবেশ করেন,এবং আফগানিস্থানের মধ্যদিয়ে পারস্যে যান।এই সময় তাঁর সফর সঙ্গী ছিলেন তাঁর স্ত্রী হামিদা বানু বেগম-বৈরাম খাঁ এবং মুলাপীর মহম্মদ।হুমায়ুন পারস্যে পৌঁছালে পারস্যের বাদশাহ তহমাস্প্ তাকে আশ্রয় দেন এবং ভারত জয়ের জন্য সাহায্য করেন।1545 খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে তহমাস্প্ এর সহযোগিতায় হুমায়ুন কান্দাহার দখল করেন।
3. রাজ্য পুনরুদ্ধার (1544 – 1556):
কান্দাহার দখলের পর হুমায়ুনের মধ্যে আশার প্রদীপ জাগ্রত হয়। বৈরাম খাঁকে কান্দাহারের শাসনকর্তা নিয়োগ করে হুমায়ুন কাবুলে যাত্রা করেন।তবে হুমায়ুনকে সব কাজেই সাহায্য করেন ছোটভাই হিন্দাল,ষড়যন্ত্রকারী কামরান ভয়ে পালিয়ে যান।1546 খ্রিস্টাব্দের 18 ই নভেম্বর হুমায়ুন কাবুলে প্রবেশ করেন।ঐ বছরই তিনি উজবেকদের পরাস্ত করে 1550 খ্রিস্টাব্দে তিনি কাবুল অভিমুখে অগ্রসর হন।1551 খ্রিস্টাব্দে হুমায়ুন ভাই আশকরীকে মক্কায় পাঠান,ছোটভাই হিন্দাল তাঁর সঙ্গে যুদ্ধে নিহত হন।1553 খ্রিস্টাব্দে ঘরের শত্রু ষড়যন্ত্রকারী ভাই মির্জা কামরানকে বন্দী ও অন্ধকরে মক্কায় পাঠান।
সিংহাসন পুনরুদ্ধারের অদম্য বাসনায় হুমায়ুনকে ব্যতীব্রস্থ করে তোলে।এরপর হুমায়ুন 1554 খ্রিস্টাব্দের 25 শে ডিসেম্বর পেশোয়ারে যান ও বৈরাম খাঁর সাথে মিলিত হন।1555 খ্রিস্টাব্দে তিনি “মাচিয়ারের” যুদ্ধে আফগানদের বিধস্থ করলে অযোগ্য আফগান সুলতান সিকান্দার শূর শিবালিক পর্বতে পলায়ন করে এবং বৈরাম খাঁ তাকে অনুসরণ করেন এবং তাকে হত্যা করেন। এবং তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র আকবরকে পাঞ্জাবের শানকর্তা নিয়াগ করেন।1555 খ্রিস্টাব্দের 23 শে জুলাই হুমায়ুন সদর্পে দিল্লী প্রবেশ করে আগ্রা জয় করে 15 বছরের ভ্রাম্যমাণ জীবনের অবসান ঘটান।
স্থাপত্য শিল্পের নিদর্শন :-
হুমায়ুনের স্থাপত্য শিল্পের নিদর্শন তেমন পাওয়া না গেলেও আগ্রা ও ফতেবাদে দুটি মসজিদ নির্মাণ তাঁর স্থাপত্য শিল্পের পরিচয় বহন করে।তবে তিনি চিত্র শিল্পের সমজদার ব্যক্তি ছিলেন।চিত্র শিল্পের প্রসারের জন্য তিনি ইরান থেকে আবদুস সামাদ ও মীরসৈয়দ আলীকে ভারতে আনেন।
রাজত্বকালের বিবরণীর উৎস :-
হুমায়ুনের রাজত্বকালের বিবরণ পাওয়া যায় তাঁর বোন গুলবদন বেগমের ফার্সী ভাষায় রচিত “হুমায়ুননামা” থেকে।হুমায়ুন রবিবারে হলুদ,শনিবারের কালো ও সোমবারে সাদা পোষাক পড়তেন।হুমায়ুনের বন্ধু জহর আফতাচি হুমায়ুনকে নিয়ে লেখেন “তারিখ-ই-হুমায়ুনি”।
শেষ জীবন :-
হুমায়ুন 15 বছর রাজ্য হারিয়ে 1555 খ্রিস্টাব্দে পুনরায় রাজ্য ফেরে পেলেও তাঁর স্বাদ আস্বাদন বেশিদিন করতে পারিনি।তিনি সব কিছু ফিরে পেলেও তাঁর সৌভাগ্যের চাকা বিপরীত দিকে ধাবিত হয়,যার ফলস্বরূপ 1556 খ্রিস্টাব্দের 24 শে জানুয়ারি দিল্লীর দিন পনাহ্ বা শের মডেলের গ্রন্থগারের সিঁড়ি থেকে পড়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং 26 শে জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।কিন্তু হুমায়ুনের এই মৃত্যুর খবর 17 দিন গোপন রাখা হয়,এবং এই 17 দিন মুঘল সাম্রাজ্যে পরিচালনা করেন মুলা বেকশী নামে এক জনৈক ব্যক্তি যে কিনা হুমানুয়ের মতো দেখতে ছিল।হুমায়ুনের মৃত্যুর সময় আকবর কালানৌর নামক স্থানে ছিলেন।হুমায়ূনের স্ত্রী হাজী বেগম দিন পনাহের কাছে হুমায়ুনের সমাধি মন্দির বা স্মৃতিসৌধ বানান।এই সমাধি মন্দিরের স্থপতি ছিলেন মির্জা ইনায়েতুল্লা।
প্রাম্ভিক জীবন সাফল্যতা দিয়ে শুরু হলেও মাঝপথের জীবন ছিল খুবই দুর্বিষহ।তবে বেশিরভাগ ঐতিহাসিকদের মতে পারিবারিক ও অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ তাঁর জীবনে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির তৈরি করেছিল।তবে তাঁর শেষ জীবন সাফল্যতায় ভরা ছিল।তাঁর সাম্রাজ্যবাদী জীবনের নানা উথাল পাথাল ঘটনা এবং তাঁর একাগ্রতা ইতিহাসে বিশিষ্ট স্থান দান করেছে।তাতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।
আরো পড়ুন