উপ-নির্বাচনে বিজেপির ভয়ে কাবু বাম থেকে তৃণমূল ৷

রাজ্যের দুই দুটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন হতে চলেছে এমাসের ২৯ তারিখে I এই উপনির্বাচন কেন্দ্রদুটি  হল যথাক্রমে নোয়াপাড়া বিধানসভা এবং উলুবেড়িয়া লোকসভাকেন্দ্র I আর এই উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করেই ভোটের ময়দানে নেমে পড়েছে রাজ্যের শাসক  থেকে বিরোধী সমস্ত রাজনৈতিক দলই ৷ রাজ্যের বিগত উপনির্বাচন গুলির ফলাফল পর্যবেক্ষন করলেই বোঝা যায় দুটি কেন্দ্রেই শাসক দলের অন্যতম প্রতিপক্ষ বিজেপি ৷ রাজ্যে যেভাবে বিজেপির ভোট দিনকে দিন বেড়েই চলেছে তাতে শাসক দল তৃণমূল এবং বাম-কংগ্রেস উভয়েই ভীষণ চিন্তিত বিজেপিকে নিয়ে ৷

তবে শাসক দল তৃণমূল এবং বামেদের সবচেয়ে চিন্তার কারণ হল নোয়াপাড়া বিধানসভা কেন্দ্র I এই কেন্দ্রে যে বামেরা জিতবে সেকথা বামেরা জোর দিয়ে বলছে না কখনোই কিন্তু তাদের কাছে সবচেয়ে চিন্তার কারণ হল দু-নম্বর স্থান ধরে রাখা ৷ অন্যদিকে শাসক দল তৃণমূল জোর দিয়ে বলছে এই কেন্দ্রে তারাই জিতবে তবুও মনের মধ্যে একটা ভয় রয়েই গিয়েছে  বিজেপিকে নিয়ে ৷ নোয়াপাড়া কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে লড়ছেন বারাকপুর(সাংগঠনিক) জেলার সভাপতি সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।এলাকায় তিনি খুব একটা পরিচিত নন I অন্যদিকে বাকি দল গুলির সকলেই এলাকায় পরিচিত মুখ, তবুও কেন বাকি দলগুলি বিজেপিকে ভয় পাচ্ছেন ? সেই ভয়ের অবশ্য কিছু সঙ্গত কারণও রয়েছে I কি সেই কারণগুলি –

প্রথমত কংগ্রেসের দখলে থাকা নোয়াপাড়া বিধানসভার বিধায়ক মধুসূদন ঘোষের মৃত্যু হওয়ায় এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস এবং বামেরা জোট করেছিল ফলে এই কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস প্ৰাৰ্থী জয়ী হয় I এখন আর বাম -কংগ্রেসের সেই জোট নেই ফলে ক্ষয়িষ্ণু শক্তি কংগ্রেস যে এখানে জিতবে না সেকথা বলাই বাহুল্য ৷ অন্যদিকে বামেদের কিছুটা প্রভাব থাকলেও তাদের অবস্থাও একই রকম ৷ একসময়ের শাসক দল এখন রাজ্যে কংগ্রেসের মতোই ক্ষয়িষ্ণু শক্তিতে পরিণত হচ্ছে দিন দিন ৷ বিভিন্ন উপনির্বাচন গুলির ফলাফল পর্যবেক্ষণ করলেই তা বোঝা যায় ৷ অন্যদিকে বিজেপির শক্তি দিন দিন বেড়েই চলেছে এবং অঘোষিতভাবে তারাই এখন রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল ৷ আগে এই অঞ্চলে বিজেপির ফ্ল্যাগই খুঁজে পাওয়া যেত  না এখন সেই এলাকায় বিজেপির পতাকায় ছেয়ে গেছে ৷ তবে ফ্ল্যাগ দিয়ে যে ভোট বিচার করা ঠিক না সেটা যেমন সত্যি তেমনি আরেকটি বড় সত্যি হল এলাকায় চোরা গোপ্তা গেরুয়া স্রোত ৷ ভিতরে ভিতরে শাসক দলের অনেক নেতাই বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন ৷ বিশেষ করে শাসক দলে বঞ্চিত হয়ে থাকা কিছু আদি তৃণমূলী এবং কিছু বিদ্রোহী নেতা ৷  ২০১৬সালের  বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি নোয়াপাড়া থেকে প্রায় ২৩ হাজার ভোট পেয়েছে যেটাও ভাবাচ্ছে শাসক থেকে বিরোধী সব পক্ষকেই ৷

দ্বিতীয়ত রাজনৈতিক চাণক্য মুকুল রায়ের প্রভাব ৷ দক্ষ সংগঠক হিসেবে মুকুল রায়ের সুনাম সর্বজনবিদিত ৷ তার উপর তৃণমূলে থাকা অবস্থায় তিনি এই এলাকা এমনভাবে ঘুরে বেড়িয়েছেন যে তিনি এই এলাকার ছোট বড় সমস্ত নেতা এবং এলাকার অলি-গলি হাতের তালুর মতোই চেনেন ৷ মুকুল রায়ের প্রভাব এখানে ভোট বাক্সে একটা বিশাল প্রভাব ফেলতে পারে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ৷ বিজেপি নেতাদের কথায় অনেক তৃণমূল কর্মীই মুকুলদার সাথে ভিতরে ভিতরে যোগাযেগ করে চলেছেন , তারা বিভিন্ন কারণে সামনে আসতে চাইছেন না ঠিকই কিন্তু ভোট বাক্সে তার প্রভাব অবশ্যই পড়বে I আর এই সব কারনই ভাবাচ্ছে সমস্ত বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে I