রোহিঙ্গাদের কারনে ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ।বাংলাদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের মধ্যে ক্রমশই বেড়ে চলেছে এডস রোগীর সংখ্যা এবং সঠিকভাবে এর মোকাবেলা করা না হলে অচিরেই তা মহামারীর আকার নিতে পারে বাংলাদেশে।
বাংলাদেশ স্বাস্থ্য বিভাগের এক রিপোর্টে জানানো হয় কক্সবাজার জেলার রোহিঙ্গাদের মধ্যে ইতিমধ্যেই দুজন মৃত্যুবরণ করেছে এই মারন ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে। জানা যায় শুধু মাত্র এই জেলাতেই এডস রোগে আক্রান্ত প্রায় 140 জন রোহিঙ্গা এবং তাদের মধ্যে 70 জনই মহিলা। বাংলাদেশ ন্যাশনাল হেল্থ ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টার এন্ড কন্ট্রোল রুমের, ইনচার্জ আয়েশা আক্তার জানান এই জেলায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলিতে প্রায় 22 টি শিশু রয়েছে যারা এই রোগে আক্রান্ত এবং এই আক্রান্তকারীদের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। তিনি আরো বলেন এই জেলায় আক্রান্তকারীদের সংখ্যাটি আরো বাড়তে পারে যদি সঠিকভাবে সনাক্ত করা হয়। কিন্তু সকল HIV আক্রান্ত কারীর সংখ্যা খুঁজে বের করা খুবই জটিল।
রাষ্ট্রসংঘের একটি রিপোর্টে জানানো হয় বাংলাদেশে প্রায় 4000 রোহিঙ্গা রয়েছে যারা এডস রোগে আক্রান্ত এবং আক্রান্তকারীদের সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে। রিপোর্টে আরো বলা হয় এখনই যদি এই রোগে আক্রান্তকারীদের খুঁজে বের করে চিকিৎসার আওতায় না আনা হয় এবং রোহিঙ্গাদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানো না হয় তবে অচিরেই এই রোগ বাংলাদেশে ভয়ংকর স্বাস্থ্য ঝুঁকির সৃষ্টি করতে পারে এবং তা মহামারীর আকারও নিতে পারে ।
পরিসংখ্যান মতে, বাংলাদেশে 2016 সালে প্রায় দেড় হাজার মানুষ HIV সংক্রামিত হয় । উল্লেখ্য মায়ানমারে মোট জনসংখ্যা 5 কোটি 20 লক্ষ এবং এদের মধ্যে এডস রোগীর সংখ্যা প্রায় 2 লক্ষ 30 হাজার। বাংলাদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা মায়ানমারের এই জনগোষ্ঠীরই একটা অংশI
মূলত অসুরক্ষিত যৌন মিলন এবং অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতির কারণেই বাংলাদেশে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বেড়েই চলেছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশ সরকারের “জাতীয় এডস নিয়ন্ত্রণ” কর্মসূচির কর্তা অধ্যাপক ডাঃ ইহতেশামুল হক চৌধুরী জানান HIV আক্রান্ত রোহিঙ্গাদের সনাক্তকরণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের কাছে। তিনি আরো জানান আক্রান্তকারীদের বয়স 2 থেকে 55 বছরের মধ্যে। ককক্সবাজার জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুস সালাম জানান আক্রান্ত হওয়া সকল রোগীকে সঠিক চিকিৎসার আওতায় আনা হয়েছে এবং পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।তিনি আরো জানান বিভিন্ন স্বাস্থ্য ক্যাম্প করে স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজও চলছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এডস রোগ মূলত অসুরক্ষিত যৌন মিলন (কন্ডোমের ব্যবহার না করা),বহুগামিতা এবং রক্তের মাধ্যমেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এক রোগীর দেহ থেকে অন্যের দেহে যায়। ফলে সুরক্ষিত যৌন মিলন এই রোগকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।